প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়ঃ ১০৮ টি পদ্ম ফুল দেবীর চরণে নিবেদন করতে হয় সন্ধি পুজোয়। সেই পদ্ম আজ অমিল। জলাশয়, খাল-বিল, বুজিয়ে ফেলে চলছে নগরোন্নয়ন। তার ফলে সঙ্কট দেখা দিয়েছে পদ্মের। তাই দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে। পদ্ম চাষিরা বলছেন, পরিস্থিতি যে দিকে গড়াচ্ছে আগামী দিনে পদ্ম পাওয়া খুব কঠিন হবে।
মহাদেবের মানস পুত্র রাবণকে বদ করতে অকালে দুর্গা পূজার সঙ্কল্প করেছিলেন রামচন্দ্র। সে কারণে এই পূজো অকাল বোধন নামে পরিছিত। মহাসন্ধির সন্ধিক্ষণে অন্ধকারকে আলোকিত করতে ১০৮ টি প্রদীপ জ্বালানোর পাশাপাশি দেবীর চরণে নীলপদ্ম দিয়ে পুজোর আয়োজন সম্পূর্ণ করেছিলেন রামচন্দ্র। সে সময় থেকে আজও ১০৮ টি পদ্ম দেবীর চরণে নিবেদন করার রীতি চালু আছে।
শুরু হয়েছে দেবী পক্ষের সূচনা। পাশাপাশি দিনের পর দিন রাজ্য জুড়ে বাড়ছে দুর্গা পূজার সংখ্যা। এর সাথেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জলাশয় ভরাটের কাজ। তাই পদ্মের চাহিদা বেশি থাকায় যোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছে চাষিরা। অকাল পদ্মের বাজারে একটু বেশী লাভের আশায় নিজেদের পুকুরেই চাষ শুরু করেছেন অনেকেই। চাষিরা জানান, আগে গ্রামে গঞ্জে এমনকি মফঃস্বলে পদ্ম চাষের জলাশয়ের অভাব ছিল না। কিন্তু বর্তমানে জলাশয়ের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। পদ্ম চাষি সর্বেশ্বর মেটে জানান, নিজেদের পুকুরে অল্প জায়গায় চাস করায় চাহিদা মতো পদ্মের যোগান দেওয়া যাচ্ছে না। পুজোর সময় ১০০ পিস পদ্ম ৮০০-১০০ টাকা দরে পাইকারি বাজারে বিক্রি হয়। কিন্তু বছরের অন্য সময় ২ টাকা পিস দরে বিক্রি করতে হয়। পদ্মের সঙ্কটের পাশাপাশি সঙ্কটে রয়েছে পদ্ম চাষিরা। পুজো উদ্যোগতারা বিগ বাজেটে পুজো করছেন। পুজোর কটা দিন আ্নন্দে মাতোয়ারা সকলেই। কিন্তু পদ্ম চাষের সঙ্কট নিয়ে সরকার ভাবছে না বলে অভিযোগ চাষিদের। চাষিদের আশঙ্কা বর্তমানে যে ভাবে পদ্ম ফুলের চাষ কমেছে তাতে আগামী দিনে পদ্মের ঘাটতি কিভাবে পুরন হবে তাই নিয়ে আশঙ্কার মেঘ জমেছে। তবে কি পদ্মের বিকল্প ফুলের সন্ধান করতে হবে?