নিউজ ডেস্কঃ বর্ধমানের জামালপুরের কোলসরা গ্রামের ঘোষাল পরিবারের ৩৬২ বছরের পুজো।তবে পুজোর বিশেষ রীতি ব্যাতিক্রম করেছে অন্য পুজোগুলি থেকে।পুজোর সময় গঙ্গা জলেই ভোগ রান্না। এটাই এই পুজোর বিশেষত্ব। সেই ভোগ খাওয়ানো হয় প্রায় তিন হাজারেরও বেশি মানুষকে।ভূকাশ্মীরের রাজবংশের বংশধর ঘোষাল পরিবার। ১৫৪০ সালে এই পুজো শুরু হয়েছিল। শেরশাহর বিশ্বস্ত কর্মচারী দিগম্বর ঘোষাল এই পুজোর প্রতিষ্ঠাতা।বাংলার নবাব শেরশাহ র আমলের এই পুজো মহা ধুমধামের সাথে আজও পালন করে আসছেন ঘোষাল পরিবার।
কথিত আছে, দিগম্বর ঘোষাল কোলসরা গ্রামে বসবাস শুরু করেছিলেন সম্রাটের নির্দেশে। সেই সময় দেবী দুর্গার স্বপ্নাদেশ পান দিগম্বর ঘোষাল।স্বপ্নাদেশে তাকে প্রতিষ্ঠা করার কথা বলেন দেবী। এই কথা শেরশাহ শোনার পর তিনি দিগম্বরকে পাঁচশো বিঘা জমি পাঞ্জা সহ দান করেন। সেই সময় থেকেই শুরু হয় এই পুজো । এখনও ঐতিহ্যে আর পরাম্পরাকে বজায় রেখে চলেছে পরিবারের বর্তমান প্রজন্ম।
এখানে অষ্টমীর বদলে দশমীতে ১১ টি কুমারীকে নিয়ে কুমারী পুজো হয়। পরিবারের সদস্য পেশায় স্কুল শিক্ষক সমীর কুমার ঘোষাল জানিয়েছেন, এক সময় এখানে বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরের কামানের আওয়াজ শুনে বলিপ্রথা চালু ছিল। তবে এখন তা বন্ধ। কোন এক বছর ভুল বশত কামান এর আওয়াজ ভেবে ভুল করে একটা বোমার আওয়াজ শুনে বলি দেওয়া হয়েছিল। আর সেই বছরই পুরোহিত মারা যান। তারপর থেকে বলি প্রথা বন্ধ।এই পুজোর বিশেষ বৈশিষ্ঠ হল গঙ্গা জলে পুজো হয়। প্রতিপদে থেকে দশমী পর্যন্ত টানা ১৬ দিন গঙ্গা জলে দেবী পুজিত হন। জন্মাষ্টমীতে পূজার্চনার মাধ্যমে প্রতিমার কাঠামোতে গঙ্গা মাটি দেওয়া হয়। মহালয়ার দিন গঙ্গায় তর্পণ করতে যান পরিবারের সদস্যরা। ফিরে আসার সময় ট্রাকে করে প্রায় ২০ টিন গঙ্গা জল নিয়ে আসেন তারা। সেই জলেই পূজার্চনা থেকে শুরু করে ভোগ রান্না সব কিছুই হয়। অষ্টমীর দিন দরিদ্রদের বস্ত্র বিতরণ হয়।