হাইলাইটস বেঙ্গল নিউজ ডেস্কঃ পাঁচ পুরোহিত মিলে দেবীকে খন্ড খন্ড করেন। তারপর ঝুড়িতে ভরে দেবীর সেই খন্ড অংশ বিসর্জন করা হয়। এই নিয়ম চলে আসছে বর্ধমানের জামালপুরের কোলসড়া গ্রামে সিদ্ধেশ্বরী কালি পুজোয়। প্রায় ৪৭৭ বছরের প্রাচীন গ্রামের একমাত্র কালি পুজোকে কেন্দ্র করে উৎসবে মেতে ওঠেন এলাকার মানুষ।
শুরু হয় ১৫৪০ খ্রী:। মুঘল সম্রাট শের শাহের দান করা জমিতে এই পুজো হয়ে আসছে। শের শাহের বিশ্বস্ত কর্মচারী দিগম্বর ঘোষালের উপর জি.টি রোড নির্মানের তদারকির দায়িত্ব পড়ে। সেই সময় তিনি এই গ্রামে কিছুদিন বসবাস করেন। কথিত আছে, তখন তিনি স্বপ্নাদেশ পান এই গ্রামে সিদ্ধেশ্বরী মায়ের পুজো প্রতিষ্ঠা করার জন্য। এই বিষয়টি সম্রাটকে জানালে সম্রাট শেরশাহ সিদ্ধেশ্বরী মায়ের পুজোর জন্য পাঁচশত বিঘা জমি দান করেছিলেন। সেখানেই মন্দির নির্মান করে আজও ধূমধামের সঙ্গে পুজো হয়ে আসছে। গ্রামে একটিই মাত্র পুজো। দ্বিতীয় আর কোন পুজো হয় না। এমনকি কারো বাড়িতে কালি মায়ের কালেন্ডার পর্যন্ত লাগানো থাকে না। কালি সেজে কোন বহুরূপী গ্রামে এলে তাকে ঢুকতে দেওয়া হয় না।
দিগম্বর ঘোষালের বংশধর সমীর ঘোষাল জানিয়েছেন, ১৮২৯ সাল পর্যন্ত এই পুজো ছিল ঘোষাল বাড়ির। কিন্তু তার পরের বছর থেকে সার্বজনীন রূপ নেয়। দেবী মূর্তিতে বিশেষ বৈশিষ্ঠ রয়েছে এখানে।গঙ্গা মাটিতে তৈরি হয় মূর্তি। মূর্তিটি একটি ত্রিশূলকে বেষ্টন করে থাকে। পঞ্চমুন্ডের আসনে দেবী অধিষ্ঠিত। দেবী মূর্তিকে বাইরে অক্ষত অবস্থায় বের করা যায় না। বিসর্জনের সময় যখন মূর্তি বের করতে দেবীর অঙ্গহানি হয়, তখন পাঁচজন পুরোহিত মিলে দেবীকে খন্ড খন্ড করেন। সেই খন্ড অংশ ঝুড়িতে ভরে নিরঞ্জন করা হয়। এটাই রীতি। এই সময় দেবীকে বেষ্টন করে থাকা ত্রিশূল বের করে মন্দিরে রেখে দেওয়া হয়। বলি প্রথা চালু রয়েছে। প্রতি বছর চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষে ও কার্তিক মাসে কালিপুজোর সময় দেবীর পুজো হয়। দূর দূরান্তের মানুষরা কোলসড়া গ্রামে এসে হাজির হন এই পুজো দেখতে।
প্রতি মুহূর্তে ‘হাইলাইস বেঙ্গল’ এর নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ Like করুন।
আপনি কি কবিতা বা গল্প লেখেন? পাঠান আমাদের। ‘হাইলাইস বেঙ্গল’ এর বিশেষ বিভাগ ‘আপনার লেখা’ তে প্রকাশিত হবে। আপনার লেখা পৌঁছে যাবে বিশ্বের দরবারে। Mob No./whatsapp No. : 9933106904