সবকিছু কি নিয়মের গণ্ডির মধ্যে হয়? এমন অনেক প্রথা প্রাচীন সময় থেকে হয়ে আসছে যেগুলি বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে তার সঠিক ব্যাখ্যা মেলা ভার। ভাতৃ দ্বিতীয়া তিথিতে ভাইয়ের কপালে দিদি ফোঁটা দেবে , ভাইয়ের মঙ্গল কামনা করবে এই প্রথা বা নিয়মই সারাবাংলা মেনে আসছে। তবে বোন বাদ যাবে কেন? দিদির কাছে ভাই আর বোন সমান। প্রশ্ন উঠতেই পারে দিদি যদি ভাইকে ফোঁটা দিয়ে আশীর্বাদ করতে পারে, তাহলে বোন দিদিকে বা দিদি বোনকে ফোঁটো দিলে অসুবিধা কোথায়? ভাতৃ দ্বিতীয়া হলে বোন দ্বিতীয় নয় কেন?
তবে এমনই প্রশ্নের ব্যাখ্যা হয়তো বিভিন্ন রকম হতে পারে। সে যাই হোক ভাতৃ দ্বিতীয়া তিথিতে বোন দিদির কপালে এবং দিদি বোনের কপালে ফোঁটা দিয়ে নজির গড়লো মুর্শিদাবাদের টিঁয়া গ্রামের সঞ্চারি দে ও সুকন্যা দে। সঞ্চারী পেশায় পোস্ট অফিসের কর্মী। তার একমাত্র বোন সুকন্যা এখন একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। গোটা বাংলা জুড়ে যখন দিদিরা ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিচ্ছে তখন এখানে দিদির কপালে তার একমাত্র বোন ফোঁটা দিল এবং শুভকামনা জানিয়ে বোনের কপালে ফোঁটা দিয়ে নজির গড়লো। ধান দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করে কপালে চন্দনের ফোঁটা দিল। অবশ্যই বোন বলল, “দিদির কপালে দিলাম ফোঁটা যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা।” আর দিদি বলল, “বোনের কপালে দিলাম ফোঁটা যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা।”
সঞ্চারি জানিয়েছেন, বরাবরই আধুনিক মানসিকতার বড় হয়েছে তারা। তাই তাদের কাছে ভাই ও বোন সমান। অন্যদিকে বোন সুকন্যাও ভীষণ খুশি।
বাবা সহদেব দে স্কুল শিক্ষক। মা সুলেখা দে গৃহবধূ। তাদের দুই সন্তান সঞ্চারী ও সুকন্যা। ছোট থেকেই একে অপরকে ছেড়ে থাকতে পারে না। তাই ভ্রাতৃ দ্বিতীয়ার বিশেষ তিথিতে বোন ও দিদি একে অপরের মঙ্গল কামনা করল। তবে সব শেষে জমিয়ে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন অবশ্যই ছিল। এদিন দিদি নিজের হাতে রান্না করেছিল বোনের জন্য। সব মিলিয়ে এক ব্যতিক্রমী ভাইফোঁটা হলো এ দিন।