এ এক অন্য মায়ের কাহিনী। যে মা সন্তান স্নেহে পালন করা একদল সারমেয় ও বিড়ালদের বসবাসের জন্য নিজের বসত ভিটেটাও দান করেছেন। গড়েছেন পশু প্রেমের অনন্য নজির । বর্ধমানের বোরহাটের ৮০ ছুঁই ছুঁই এই অশীতপর বৃদ্ধা আজও পথ পশুদের সেবা করে চলেছেন। সস্নেহে, সযত্নে।
এই মায়ের নাম তৃপ্তি চক্রবর্তী। পেশায় অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষিকা। ১৯৯৫ সালে চাকরি জীবন থেকে অবসর নেওয়ার পর পশু সেবাকেই জীবনের ব্রত হিসাবে গ্রহন করেন। তবে শুরু করেছিলেন ছোট বয়সেই। রাস্তাঘাটে আহত পশুদের দেখলে স্নেহের হাত বাড়িয়ে দিতেন। পরবর্তীকালে স্কুল শিক্ষিকার চাকরি পাওয়ার পর সেই কাজটা অনেক সহজ হয়েছিল। কারন, তাদের চিকিৎসা করানোর অর্থের সমস্যা হত না। তবে অবসরের পর নিজের বাড়িতেই গড়লেন পশুসেবা কেন্দ্র। নিজের বসত ভিটেটা এই সংস্থাকে দান করেছেন । দান করেছেন সঞ্চিত অর্থও। এরপর ৫ কর্মী নিয়োগ করে শুরু করলেন যুদ্ধ। সারা দিন বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে আহত ও অসুস্থ পশু সংগ্রহ করে তারা এই বাড়িতে নিয়ে আসে। এরপর তাদের শুরু হয় পরিচর্যা। তৃপ্তি দেবী নিজের হাতে সেবা শুশ্রুসা করে সুস্থ করে তোলেন এদের। সুস্থ হলে তাদের পুরানো জায়গাতে ফিরিয়ে দিয়ে আসা হয়। তবে এমন মাতৃ স্নেহ পেয়ে বেশিরভাগ পুশুরাই আর তৃপ্তি দেবীকে ছেড়ে যেতে চাই না। তাই তাদেরকে রেখে দিয়েছেন নিজের বাড়িতে। এদের নামও দিয়েছেন- ভিম,নকুল, সফেদ,পুলি, পার্ক, রাজা আরও কতো কি। এক এক জনের এক একটা নাম। প্রায় ৪০ টি সারমেয় , বিড়াল ও হনুমান ররেছে তৃপ্তি দেবীর তত্ত্বাবধানে।
শুধু সেবা নয়। নিজের উদ্যোগেই বিভিন্ন জায়গায় পশুদের ভ্যাক্সিন দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। সারা বছর ধরে বিভিন্ন সেমিনার করেন। উদ্দেশ্য এই অসহায় পশুদের পাশে আরো মানুষ এগিয়ে আসুক। কোন কিছু পাওয়ার আশায় নয়, একান্ত মানসিক তৃপ্তি পাওয়ার জন্যই এই বয়সেও এই কাজ করে চলেছেন তৃপ্তি দেবী।
কি বলছেল তৃপ্তি দেবী। শুনুন-