প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়ঃ পিতৃপক্ষের শেষ। শুরু হল দেবীপক্ষ। পঞ্জিকা মতে এই শুভ লগ্নেই সূচনা হয় মহালয়ার। দেবীপক্ষের আনন্দে মেতে ওঠা দিন আজ থেকেই শুরু। এই বিশেষ দিনটির ভোরে প্রতিটি বাঙ্গালীর ঘরে যার কদর সব চেয়ে বেশি হয়ে থাকে তা হল রেডিও। ডিজিটাল সেট টপ বক্সের যুগেও শুধু মাত্র এই দিনে এই শ্রবণ যন্ত্রের টি আর পি তুঙ্গে থাকে। মহালয়ার ভোরে রেডিওকে পাশে না পাওয়ার কথা ভাবতেই পারেননা বাঙ্গালী। দেবীপক্ষের ভোরে মহিষাসুরমর্দিনী র মূর্চ্ছনায় প্রসার ভারতী সম্প্রচারিত মহালয়া অনুষ্ঠান আজও একমেব অদ্বিতীয়ম বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের চণ্ডীপাঠ আর পঙ্কজ মল্লিক দ্বিজেন মুখ্যোপাধ্যায়, সুকৃতি ঘোষ সহ অন্যন্য খ্যাতনামা শিল্পীদের কণ্ঠে ধ্বনিত আগমনী সঙ্গীত আজও বাঙ্গালীকে নস্টালজিক করে রেখেছে। ১৯৩১ সাল থেকে চলে আসা সেই আবেগ আজও অক্ষুণ্ণ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির হাত ধরে চাহিদার বদল ঘটেছে। তবুও এই আবেগের বদল ঘটেনি।
প্রভাতী গান শুনে বাঙ্গালীর ঘুম ভাঙ্গা। গল্প দাদুর আসর কিংবা মারকাটারি ফুটবল খেলার ধারাভাষ্য – সবেতেই ছিল রেডিওর কদর তুঙ্গে। পরবর্তী সময়ে টেলিভিশন পৌছে যায় সকলের ঘরে। স্বভাবতই কদর কমে রেডিওর। এখন তো সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে স্মার্ট ফোনেই ধরা দিচ্ছে গোটা বিশ্ব। তবুও মহালয়া মনে করিয়ে দেয় একসময়ের বাঙ্গালীর প্রেম ভালোবাসা আর দুঃসময়ের বন্ধু রেডিওকে। এই দিনটিতেই আজও বাঙ্গালী ভোর হলেই রেডিওর সুইচ অন করে আকাশবাণী কলকাতা ক সেন্টারে সংযুক্ত করেন। শুরু হয় সেই আবেনঘন কণ্ঠস্বর “আশ্বিনের শারদ প্রাতে বেজে উঠবে আলোকমঞ্জির”। এর সঙ্গেই বাঙ্গালীর ঘর থেকে ধ্বনিত হয় শঙ্খধ্বনি।