Purba Bardhaman: এখানে মা কালি প্রেম রক্ষাকারী। মায়ের নির্দেশে বন্ধ হয়েছিল নরবলি। আর এই কালিকে ঘিরে রয়েছে এক অমর প্রেম কাহিনী। (Love story)
বর্ধমান শহর (Bardhaman town) সংলগ্ন দামোদর তীরে তেজগঞ্জে (tejganj) রয়েছে এই কালীমন্দির (Kali temple)। নাম বিদ্যাসুন্দর কালী(Vidya Sundar Kali)। তবে এই কালীর আগে নাম ছিল দক্ষিণ মশানী কালী। বিদ্যাসুন্দর কালী নাম হওয়ার পিছনে রয়েছে এক প্রেম কাহিনী।
শোনা যায়, ঘন জঙ্গলে ঘেরা এলাকা ছিল এখানে। ডাকাতরা কালী পূজা করত এই জঙ্গলের মধ্যে মন্দিরে। সেই সময় এখানে নরবলি চালু ছিল।
সেই সময় কোন এক বর্ধমান রাজার কন্যা ছিল ‘বিদ্যা’ । মায়ের সঙ্গে এই মন্দিরে আসতো সে। নিজের হাতে গাঁথা ১০৮ টি জবা ফুলের মালা নিয়ে দেবীকে পরিয়ে যেত।
তখন এই দেবীর পূজা উপাসনা করতো’ সুন্দর’ নামের এক তরুণ। এখানে রাজকন্যা বিদ্যার সাথে তার আলাপ হয়। গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। আস্তে আস্তে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। এখানে উচ্চ নিচ ভেদাভেদ এক হয়ে যায়।
একদিকে যেমন রাজকন্যা বিদ্যা ছিলেন অপরূপা। অন্যদিকে পুরোহিত ‘সুন্দর’ ছিলেন সুন্দর চেহারার এবং রুপের অধিকারী।
লোকশ্রুতি আছে, রাজকুমারীর সঙ্গে দেখা করার জন্য মন্দির থেকে রাজকুমারী বিদ্যার কক্ষ পর্যন্ত একটি গোপন সুড়ঙ্গ পথ তৈরি করে সুন্দর। সেই গোপন পথেই মিলিত হতেন তারা। কিন্তু রাজার গুপ্তচরদের নজরে আসে বিষয়টি। তারা রাজাকে জানায়। অবশেষে রাজার হাতে ধরা পড়েন দুজনেই। মৃত্যু দণ্ডের আদেশ দেন তিনি।
বলির জন্যে মা কালীর কাছে আনা হয় বিদ্যা এবং সুন্দর কে। তবে তাদের শেষ ইচ্ছা জানতে চাওয়া হলে কাপালিককে তারা বলে মাকে তারা একবার প্রার্থনা করতে চায়। তার সুযোগ দিতে। রাজি হয় কাপালিক। কথিত আছে, তাঁরা যখন মাকে ডাকছিলেন তখন একটি তীব্র আলো এসে কাপালিকের চোখে লাগে। কাপালিক হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পরে যায়। পর বিদ্যা ও সুন্দরকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।। সেই থেকেই এই দেবীর নাম হয় বিদ্যাসুন্দর কালী।
এখনো নিয়ম ও নিষ্ঠার সঙ্গে এই দেবীর পুজো হয়। প্রতিদিন হয় নিত্য সেবা। প্রতি অমাবস্যায় বলি হয় । প্রতিদিন নিত্য সেবায় আতব চালের সঙ্গে মাছ দিতে হয় ভোগের জন্য।
শোনা যায়, বিদ্যা এবং সুন্দর অদৃশ্য হওয়ার পরেই রাজাকে দেবী নির্দেশ দেন মন্দিরে নরবলি বলি বন্ধ করার। এরপরেই বন্ধ হয়ে যায় নরবলি।