নিউজ ডেস্ক: সম্প্রীতির নজির পূর্ব বর্ধমানে। হিন্দু মায়ের সৎকারে শবদেহের খাটিয়া কাঁধে তুলে নিলেন দুই মুসলিম সন্তান। এমনই নজির পূর্ব বর্ধমানের গলসীতে।
পূর্ব বর্ধমানের গলসির গলিগ্রামের বাসিন্দা সরস্বতী দাস। মারণ ব্যাধি ক্যানসারে আক্রান্ত হন সরস্বতীদেবী। স্বামী ভৈরব দাস আগে পঞ্চায়েতে ঢ্যাড়া পেটানোর কাজ করতেন। সেই কাজ এখন নেই। মাঠে ঘাস কেটে সারাদিনে সামান্য রোজগারই সংসার চালান। কোন রকমে কষ্টে বেঁচে রয়েছেন। তার উপর স্ত্রীর কঠিন অসুখ। খরচ চালাতে হিমসিম খাচ্ছিলেন। চিকিৎসার দূরে থাক, ঠিকমতো খাবার কেনার সামর্থ ছিল না। এই খবর শোনার পর এই পরিবারের পাশে এসে দাঁড়ান গ্রামের দুই মুসলিম যুবক আজিজুর রহমান ও লালন সেখ। দীর্ঘ প্রায় ছয় মাস ধরে নিজেদের সাধ্যমতো সরস্বতীদেবীর জন্য চিকিৎসার খরচ জোগাচ্ছিলেন। তার সাথে খাবার, পোশাকেরও ব্যবস্থা করেছেন সাধ্যমতো। শেষ পর্যন্ত তাদের সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়। মৃত্যু হয় সরস্বতী দেবীর। মা হারানোর বেদনা অনুভব করেন আজিজুর, লালন। আজিজুর বললেন, মাসিমা কে অনেক চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারলাম না।
সরস্বতী দেবীর মৃত্যুর পরও নিজের কর্তব্য থেকে সরে আসেননি আজিজুর, লালন। ধর্মের বর্ম দূরে সরিয়ে প্রতিবেশী, আত্মীয়দের সঙ্গেই সরস্বতী দেবীর দেহ কাঁধে তুলে নেন। শ্মশানযাত্রী হলেন তারা।সৎকারের সমস্ত খরচও বহন করলেন।
মৃতার স্বামী ভৈরব দাস বলেন, নিজের সন্তানের মতোই আজিজুর ও লালন সব সময় পাশে ছিল। শেষ যাত্রায় তারা কর্তব্য পালন করলো।
আপডেট খবর জানতে হাইলাইটস বেঙ্গল ফেসবুক পেজ লাইক করুন।
আজিজুর ও লালন অবশ্য এ সব নিয়ে ভাবতে নারাজ। তারা বলেন, মানুষ হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। মানুষ তো মানুষের জন্যই।
এই ঘটনা প্রমান করলো, ধর্ম যার যাই হোক সব থেকে বড়কথা মানুষ মানুষের জন্য। তারই স্বাক্ষী থাকলেন পূর্ব বর্ধমানের গলসির গলিগ্রামের বাসিন্দারা।