ওয়েব ডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই বেআইনি বালি কারবারের বিরুদ্ধে অভিযান পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের। চলছে নজরদারি। অন্যদিকে বালি ব্যবসায়ীদের পাল্টা দাবি, বৈধ খাদানেই পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকের পরই পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে বেআইনি বালি খাদান এবং ওভারলোডিং বালি বোঝাই ট্রাকের বিরুদ্ধে অভিযানে জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গা থেকে বেআইনি খাদান চালানো এবং বালি বোঝাই ওভারলোডিং ট্রাক আটক করে গ্রেফতার করা হয় কয়েকজনকে।
পূর্ব বর্ধমান জেলাশাসক আয়েশা রানী জানিয়েছেন, ট্রান্সপোর্ট ডিপার্টমেন্টকে সঙ্গে নিয়ে প্রশাসন নজরদারি চালানো হচ্ছে। একদিকে যেমন বেআইনি বালি খাদান গুলি তে অভিযান চলছে। পাশাপাশি ওভারলোডিং বালি বোঝাই ট্রাক ধরপাকড় চলছে।
সম্প্রতি পুলিশ জামালপুরের চলবলপুর এলাকায় দামোদর নদে একটি বালি ঘাটে অভিযান চালিয়ে ৯ জনকে গ্রেফতারের পাশাপাশি বালি তোলার মেশিনও বাজেয়াপ্ত করে। যদিও পরবর্তীতে ধৃতরা সকলেই আদালত থেকে জামিন পেয়ে যায়। ধৃতদের বেশির ভাগই লরিচালক। এছাড়া রয়েছেন খাদানের ম্যানেজার এবং দামোদর থেকে বালি তোলার কাজে যুক্ত মেশিনচালকেরা।
পুলিশের দাবি, জামালপুর থানার বেরুগ্রাম অঞ্চলের চলবলপুরে দামোদর থেকে মেশিনের সাহায্যে অবৈধ ভাবে বালি তুলে তা লরিতে ভরে পাচারের প্রস্তুতি চলছিল। সেখানে মজুদ বালির চালান ব্যবহার করে নদী থেকে বালি তুলে গাড়িতে লোড করা হচ্ছিলো। সেই খবর পেয়েই অভিযান চালায় জামালপুর থানার পুলিশ। হাতেনাতে পাকড়াও করা হয় সকলকে।
যদিও যে বালি ঘাটে পুলিশ গত ২৪ নভেম্বর অভিযান চালিয়েছিলো, প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে সেই খাদান টি জেলাশাসক অনুমোদিত বৈধ ঘাট। নদী থেকে বালি তোলা, মজুদ ও পরিবহনের সরকারি বৈধ অনুমতি রয়েছে। তবে ২৭তারিখ ঘাট টির বৈধতা অর্থাৎ মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। জানা গেছে, গত ১৮নভেম্বর বর্ষাকালীন নদ নদী থেকে বালি উত্তোলন বন্ধের নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেয় জেলাশাসক। আর তারপরই নদী থেকে বালি তোলার কাজ শুরু করেছিল ঘাট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অভিযোগ, আচমকা জামালপুর থানার পুলিশ গভীর রাতে অভিযানে নেমে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে।
অন্যদিকে বালি ঘাটটির ম্যানেজার লক্ষ্মীনারায়ণ সাউ এই ঘটনা প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ’ গত ২৭তারিখ পর্যন্ত তাদের ঘাটটি সরকারিভাবে বৈধ ছিলো। সেখানে বালি তোলা বা মজুদ করার অনুমতিও ছিলো। কিন্তু ২৪তারিখ গভীর রাতে পুলিশ আচমকা অভিযান চালিয়ে আমাদের ঘাটে এসে ৯জনকে গ্রেপ্তার করে। আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। ধৃতরা মুক্তি পেয়েছে। তবে সরকার অনুমোদিত বৈধ ঘাটগুলোতে পুলিশি হয়রানি বন্ধ করে অবৈধ কারবারিদের দিকে যদি পুলিশ নজর দেয় সেক্ষেত্রে সরকারি রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বাড়বে। কারণ আমরা সরকারের ঘরে কোটি কোটি টাকা জমা করে বৈধভাবে ব্যবসা করি।’
এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলাশসক জানিয়েছেন, খাদান মালিকদের পক্ষ থেকে এই ধরনের অভিযোগ তার কাছে করা হলে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।